যেসব কারনে সভাপতি পদে অযোগ্য বর্তমান সভাপতি মিসেস হাসিনা দৌলা।।

সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বাষিক কাউন্সিল ১৫ নভেম্বর, যেসব কারনে সভাপতি পদে অযোগ্য বর্তমান সভাপতি মিসেস হাসিনা দৌলা।।

নিউজ ডেস্ক :

আগামী ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বাষিক কাউন্সিল। কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে এখনও পর্যন্ত একক প্রার্থীর নাম  শোনা গেলেও সভাপতি পদে রয়েছেন একাধিক প্রার্থী, সেকারনে সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম রাজীব কে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এক রকম কাউন্সিলের পূর্বেই একক প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা শুনবার অপেক্ষায় রয়েছেন। যদিও বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে আলী হায়দার রয়েছেন কিন্তু তিনি মুরাদ জং এর শোকে দলীয় সকল কর্মকান্ড থেকে এখনো নিজেকে বিরত রেখেছেন।

এদিকে সভাপতি পদ প্রার্থী হিসেবে পরপর দু’বারের সভাপতি ও সাবেক ঢাকা জেলা পরিষদ প্রশাসক মিসেস হাসিনা দৌলা এবং  নতুন ও তরুণ নেতৃত্ব পেতে সভাপতি পদে বর্তমান ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশারাফ হোসেন চৌধুরী মাসুদ এর নাম শোনা যাচ্ছে।

সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দু’জনই রয়েছেন শক্তিশালী অবস্থানে। দু’জনেরই রয়েছে ভিন্ন রকম যোগ্যতা।

রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনায় আশরাফ হোসেন চৌধুরী ওরফে মাসুদ চৌধুরী বেড়ে উঠেছেন রাজনৈতিক ভাবনার মধ্য দিয়ে। মামা প্রয়্যাত সামসু দৌহা খান মজলিশ ছিলেন বঙ্গবন্ধুর খুব আস্থাভাজন ব্যক্তি এবং বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পছন্দের মানুষ। প্রয়্যাত সামসু দৌহা খান মজলিশ সাভারের সাবেক সাংসদ এবং ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন।  মরহুম সামসু দৌহা খান মজলিশ এর আপন ভাগ্নে আশরাফ হোসেন চৌধুরী মাসুদ। মামার কাছ থেকেই যার রাজনৈতিক হাতে খড়ি।

ছাত্রজীবন থেকে আজ পর্যন্ত আশরাফ হোসেন চৌধুরী মাসুদ ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পদে থেকেছেন, বর্তমানে তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের যুন্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সাভারের আওয়ামী রাজনীতিতে সাদা মানুষ হিসেবে যারা রয়েছেন তিনি তাদের প্রথম সারির একজন। মামার আর্দশকে ধারণ করে সাভারের আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে যেতে সভাপতি পদের প্রার্থী হয়েছেন। সুযোগ পেলে তিনি যথাযথভাবেই সাভারের আওয়ামী লীগকে সু-পরিকল্পিত ভাবে এগিয়ে নিতে পারবেন বলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিশ্বাস।

এদিকে টানা দ্বিতীয় বারের মতো সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বপালন করছেন মিসেস হাসিনা দৌলা। দায়িত্ব পালনকালীন সময়টিতে তার বিরুদ্ধে পদ বাণিজ্যের সাথে সম্পৃক্ততার তথ্য  রয়েছে। দলীয় একাধিক ব্যক্তি পদ পেয়েছেন আর্থিক উৎকোচের বিনিময়ে কিন্তু তারা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। তার পূর্বে সাভারে দলীয় কার্যালয় থাকলে, তিনি সাভারের রাজনীতিতে আসবার পর ভাড়ায় চালিত দলীয় কার্যালয়ের সম্পত্তিটি নিজ নামে কিনে  নেন, কিন্তু কিছুদিন সেখানে দলীয় কাজ চালালেও পরবর্তীতে বেশী দাম পেয়ে দলীয় কার্যক্রমের কথা না ভেবে কাউকে কিছু না জানিয়ে গোপনে তার দলীয় কার্যালয়ের সম্পত্তিটি বিক্রী করে দেন। তার পর এক যুগেরও বেশী সময় পেরিয়ে গেলেও দলীয় কার্যালয় ছাড়াই চলছে দলীয় কার্যক্রম। তার বিরুদ্ধে সংগঠন পরিচালনায় নানা বিরোধে জড়িয়ে পড়ার সমালোচনা রয়েছে । সব কিছুর পরও দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সরাসরি যোগাযোগ থাকায় ঢাকা জেলা পরিষদ প্রশাসক এর দায়িত্ব পান মিসেস হাসিনা দৌলা। কিন্তু সেখানেও দলীয় সুনাম ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বাস ভঙ্গ করেন তিনি, জেলা প্রশাসক থাকা অবস্থায় সাবেক ঢাকা জেলা পরিষদ প্রশাসক মিসেস হাসিনা দৌলা জড়িয়ে পড়েন দূর্নীতির ভিতর। উন্নয়ন প্রকল্পের নামে, নামে বে-নামে টাকা লুটপাঠ চলে তার দপ্তরে। অভিযোগ উঠে একশত কোটি টাকা লুটপাটের। তদন্তে নামে দুদক, সেসময় সকল পত্র-পত্রিকার শিরোনামে উঠে আসে মিসেস হাসিনা দৌলার দূর্নীতির চিত্র। পরবর্তীতে ঢাকা জেলা পরিষদ প্রশাসক পদ থেকে সরিয়ে নেয়া হয় তাকে। ক্ষুন্ন হয় আওয়ামী লীগের ভাবমূর্ত্তি।

এদিকে দেশব্যাপী শুদ্ধি অভিযানের অংশ হিসেবে দলীয়ভাবেও শুদ্ধি অভিযান চালানো হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূলে কাউন্সিলের (সম্মেলন) আয়োজন ও নতুন কমিটিতে বিতর্কিতদের না রাখার বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। দিকনির্দেশনায় তিনি দলে অনুপ্রবেশকারী, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজ, বিতর্কিত, যারা দলে বলয় তৈরি করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছেন ও পদ বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত- এমন নেতাদের কোনো স্তরের কমিটিতে স্থান না দিতে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। এ ব্যাপারে জেলা-উপজেলা নেতাদের সতর্ক করে যে চিঠি পাঠিয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ।

দলীয় এমন দিকনির্দেশনার পর সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের আগামী ১৫ নভেম্বরের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে সভাপতি হিসেবে কাকে দায়িত্ব দেয়া হবে সেটি নিয়ে কৌতুহলী অবস্থানে রয়েছেন দলের সাধারণ ত্যাগী কর্মীরা।

তবে মিসেস হাসিনা দৌলার সাথে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি সম্পর্ক, কেন্দ্রীয় বড় বড় নেতাদের সাথে রয়েছে সক্ষতা, মিসেস হাসিনা দৌলা সেদিক থেকে সভাপতি আবারো হতে পারেন এমন কথা সাভারে প্রচলিত থাকলেও, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা-কর্মীদের আস্থা রয়েছে জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর , তৃণমূল নেতা-কর্মীরা মনে করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে শুদ্ধি অভিযান চালাচ্ছেন এবং যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তার যথাযথ প্রতিফলন ঘটবে দেশের সব জেলা উপজেলায়।

সেদিক থেকে আলোচিত সাবেক ঢাকা জেলা পরিষদ প্রশাসক মিসেস হাসিনা দৌলার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ রয়েছে তাতে সভাপতি পদটি হারাবেন এবং তিনি এ পদের অযোগ্য বলে মনে করেন সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

শেষ———।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *