ধামরাইয়ে সাবেক এমপি এমএ মালেক ও তার স্ত্রীকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা ও বহিস্কারের দাবি নেতাকর্মীদের

ধামরাইয়ে সাবেক এমপি এমএ মালেক  তার স্ত্রীকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা বহিস্কারের দাবি নেতা-কর্মীদের।।

 

নিউজ হাঁট ডেস্ক :

ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক এমপি এম.এ মালেক ও তার স্ত্রী কেন্দ্রীয়  মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মীনা মালেক’কে ধামরাইয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষনা ও দল থেকে বহিস্কারের দাবি জানিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার ( ২৬ নভেম্বর)  বিকেলে ধামরাই দক্ষিণপাড়ার মুন্নু কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের যৌথ সভা ও মিছিল করে এ দাবি জানান নেতা-কর্মীরা।

এ সময় বক্তারা বলেন, ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ মালেক গত পাঁচ বছর এমপি থাকাকালীন সময়ে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা, জমি দখল, নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা সহ বিভিন্ন দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ তোলেন।

এদিকে এমএ মালেক,  তার ও তার স্ত্র্রীর বিরুদ্ধে তোলা সকল অভিযোগ মিথ্যা ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমুলক বলে দাবি করেন।

ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুম খানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগে সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম রতন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সাকু, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র গোলাম করিব, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কৃষি বিষয়ক সম্পাদক শফিক আনোয়ার গুলশান, উপজেলা আওয়ামী লীগে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ মাসুদ খান লাল্টু, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর সাহেব আলী, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক কাউন্সিলর শহিদুল্লাহ, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি বালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আহম্মদ হোসেন, সোমভাগ  ইউপি চেয়ারম্যান আজাহার আলী, ধামরাই সদর ইউপি চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন, ভাড়ারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম, পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম সহ অন্যরা।

সভায় বক্তারা বলেন, ২০১৭ সালে এমএ মালেক এমপি থাকাকালীন সময়ে তার স্ত্রী মীনা মালেক ধারমাই পৌরসভার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে বিরোধপূর্ণ জমি ক্রয় করেন। এ নিয়ে বে-সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নাইন এ একটি প্রতিবেদন প্রচার হয়। এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত হোসেন সাকু, পৌর মেয়র গোলাম করিব, কাউন্সিলর আরিফুল ইসলাম ওই চ্যানেলে সাক্ষাতকার দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন মীনা মালেক। ওই মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত। এ মামলায়  তারা মঙ্গলবার আদালত থেকে জামিনপ্রাপ্ত হন।

উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা  এ নিয়ে  ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার বিকেলে যৌথ সভার আয়োজন করে।

এসময় সাবেক এমপি ও তার স্ত্রীকে ধামরাইয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষনা ও দল থেকে বহিস্কারের দাবি জানান।

বক্তারা বলেন, সামনে ইউনিয়ন, পৌর ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনসহ কোন সভা-সমাবেশে এমএ মালেককে অংশ গ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। এ সভায় আগামীতে বিভিন্ন ইউনিয়ন সম্মেলনে এমএ মালেককে বাদ দিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাসুম খানকে উদ্বোধক হিসেবে রাখার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা সাখাওয়াত হোসেন সাকু বলেন, এমএ মালেক এমপি থাকাকালীন আমি,পৌর মেয়রসহ প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মীদের নামে মামলা করেছে। ঠুনকো অজুহাতে নেতাকর্মীদের মারপিট করেছে। এছাড়া দুর্ণীতি করে এমএ মালেক অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। তার সম্পদের অনুসন্ধান করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) আহবান জানিয়েছেন।

ধামরাই পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র গোলাম কবির বলেন, সাবেক এমপি এমএ মালেকের স্ত্রী মীনা মালেক পৌরসভার কোন অনুমতি না নিয়ে বিরোধপূর্ণ জমিতে ভবন করার কথা চ্যানেল নাইনে সাক্ষাতকার দেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। সেই মামলায় গতকাল মঙ্গলবার আদালত থেকে জামিন পেয়েছি। এমএ মালেকের ইঙ্গিতে অসংখ্য নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। আমরা এমএ মালেক ও তার স্ত্রীকে ধামরাইয়ে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করেছি।

তবে  এসব অভিযোগের বিষয়ে সাবেক এমপি এমএ মালেক বলেন, আমি ও আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ষড়যন্ত্র ও মিথ্যা। আগামী ৬ ডিসেম্বর ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন। এ সম্মেলনে আমি সভাপতি প্রার্থী। আমাকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

 

সাভার

২৬.১১.১৯

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *